ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
লন্ডনের স্ট্যামফোর্ড হিলের চারেদিকে ইহুদি সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ, ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। তারা ইসরায়েলের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর যেশিভা বা ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের, সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
উল্লেখীত ইজরায়েলে প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সেনাবাহিনীর ট্রেনিং বাধ্যতামুলক। এবার ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেশিভা বা আমাদের ভাষায় মাদরাসার ছাত্রদের বাধ্যতামুলকভাবে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।

বিক্ষোভকারীরা টোরাহর নির্দেশনা উল্লেখ করে বলেন, মাসিহার আগমনের আগে কোনো ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠন বা তার সেনাবাহিনীতে যোগদান ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ। অর্থাৎ আমরা মুসলমানেরা কোনো কাজ করলে যেমন কোরআন হাদিসের রেফারেন্স উল্লেখ করি।
ঠিক তেমনিভাবে, বিক্ষোভকারী ইহুদিরা তাদের ধর্মগ্রন্থ টোরাহ এর রেফারেন্স দিয়ে বলেন, রাষ্ট্রের গঠন বা আইন তখন বৈধ বা কাম্য নয়, যতক্ষণ না মাসিয়া বা মুক্তিদাতা আগমন করেন। অর্থাৎ ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে ঈশ্বরের নির্বাচিত মুক্তিদাতা বা রাজা আসেন।
তাদের মধ্যে এমন একটি ধারণা আছে যে, মাসিয়ার আগমনের আগে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠন বা এতে সহায়তা করা নিষিদ্ধ। যেমন – রাষ্ট্রসেবায় বা সেনাবাহিনীতে যোগদান ধর্মীয়ভাবে ভুল বা নিষিদ্ধ, কারণ এটি ধর্মীয় নিয়ম বা ইশ্বরের সময়ের ইচ্ছা এর বিপরীত মনে হয় তাদের কাছে।

এই প্রেক্ষাপট থেকে তারা ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র বা বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনী পরিষেবার বিরোধিতা করছে। এসব ইহুদিরা প্ল্যাকার্ডে ধর্মীয় সন্ত্রাস লেখার মতো বক্তব্য পর্যন্ত তুলে ধরেছেন।
এই বিক্ষোভটি Vaad Hatzolo UK-এর আয়োজনে হয়েছে, যেখানে রাব্বি ( ইহুদিদের ধর্মীয় কোট এবং সম্প্রদায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন। তারা ইসরায়েলে চারেদি যুবকদের গ্রেপ্তার এবং জোরপূর্বক নিয়োগকে “ধর্মীয় নিপীড়ন ” বলে অভিহিত করেছেন।
কিছু লিফলেটে জায়োনিবাদের সমালোচনা করে বলা হয়েছে যে, জায়োনিস্ট রাষ্ট্র টোরাহর মূল্যবোধের বিরুদ্ধে কাজ করছে। ইসরায়েলে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর থেকে চারেদি ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে অসন্তোষ বেড়েই চলেছে।

হাজার হাজার যেশিভা ইহুদি ছাত্রকে ড্রাফট নোটিশ পাঠানো হয়েছে, কিন্তু অধিকাংশই তা অমান্য করেছেন। এর ফলে জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে বড় বড় বিক্ষোভ হয়েছে। লন্ডনের এই প্রতিবাদ তারই অংশ, যা দেখায় যে বিশ্বের চারেদি সম্প্রদায় ইসরায়েলের এই নীতির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।
এই বিক্ষোভটি শান্তিপূর্ণ ছিল এবং পুলিশের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়েছে। ইসরায়েলি দূতাবাস থেকে এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনা ইহুদি সম্প্রদায়ের অভ্যন্তরীণ বিভেদকে স্পষ্টভাবে দুনিয়ায় সামনে তুলে ধরে, যেখানে অ্যান্টি – জায়োনিস্ট চারেদি গ্রুপ ধর্মীয় ইহুদিবাদকে রাষ্ট্রীয় জায়োনিবাদ থেকে আলাদা করে দেখে।
আর এই বিক্ষোভ প্রতিবাদ করছে চারেদি ইহুদিরা।
চারেদি সম্প্রদায় হলো ইহুদিদের মধ্যে সবচেয়ে রক্ষণশীল, কঠোর ধর্মীয় গোষ্ঠী। এদেরকে অনেক সময় Ultra যিউশও ও বলা হয়। এদের জীবনধারা, পোশাক, শিক্ষা সব কিছুই পুরনো ইহুদী ধর্মীয় নিয়ম হালাখা পুরোপুরি অনুসরণ করে।
সুত্র : jewishnews.co.uk
thejc.com
BBC News
and UMK News umknews.com





