ইহুদিদের বাঁচানো মুসলিম হিরোর প্রসংশায় ট্রাম্প!
ইহুদিদের বাঁচানো মুসলিম হিরোর প্রসংশায় ট্রাম্প!
ইহুদিদের হানুকা উৎসবে হামলার ঘটনায়, মুসলিম ফল ব্যবসায়ী খালি হাতে দুর্বৃত্তদের বন্ধুক কেড়ে নেই। তার এই সাহসীকতা তো এখন ভাইরাল। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পর এবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রসংসায় ভাসালেন।
হানুকা উদযাপনের মাঝে এই ইহুদি-বিরোধী হামলা বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় তুলেছে। এই হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত এবং ৪০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
কিন্তু এই অন্ধকারের মাঝে আলোর রশ্মি হয়ে উঠেছেন ৪৩ বছরের সিরিয়ান-অস্ট্রেলিয়ান মুসলিম ফল ব্যবসায়ী আহমেদ আল-আহমেদ, যিনি অস্ত্রহীন হাতে একজন গুলিবাজকে ধরে ফেলে তার রাইফেল ছিনিয়ে নেন এবং অসংখ্য প্রাণ বাঁচান।
এই অসাধারণ বীরত্বের জন্য আহমেদকে বিশ্বনেতারা প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে তার বক্তব্যে আহমেদকে a very, very brave person বলে অভিহিত করেন এবং বলেন, “যিনি সামনে থেকে একজন শুটারকে আক্রমণ করেছেন এবং অনেক প্রাণ বাঁচিয়েছেন। যা অনেক সাহসী পদক্ষেপ। ট্রাম্প আরও যোগ করে বলেন, তার প্রতি আমার গভীর সম্মান রয়েছে।

তিনি এখন হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায়। এই প্রশংসা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের ইতিবাচক প্রতিনিধিত্বকে তুলে ধরেছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, আহমেদ পার্ক করা গাড়ির আড়াল থেকে লুকিয়ে থেকে হঠাৎ ছুটে গিয়ে একজন গুলিবাজকে পিছন থেকে ধরে ফেলেন এবং তার অস্ত্র ছিনিয়ে নেন। এতে তিনি নিজেও দুটি গুলি খান – হাত ও বাহুতে । এভাবে তিনি নিজের জীবন বাজি রেখে হামলার তীব্রতা অনেকটা কমিয়ে দেন।
তার চাচাতো ভাই মুস্তফা মিডিয়াকে বলেন, তিনি ১০০ শতাংশ হিরো। তিনি সাধারণ জীবন যাপন করেন – দুই সন্তানের বাবা, কিন্তু তার সাহস আজ অনেকের জীবন বাঁচিয়েছে।
আহমেদ সাউথারল্যান্ডে একটি ফলের দোকান চালান এবং আরব-অস্ট্রেলিয়ান সম্প্রদায়ের পরিচিত মুখ। হামলার পর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়,অস্ত্রোপচারের পর তার অবস্থা স্থিতিশীল।

হামলায় দুই আক্রমণকারী ছিলেন বাববা ও ছেলে। বাবা সাজিদ আকরাম বয়স ৫০ বছর এবং ছেলে নাভিদ আকরাম বয়স ২৪ বছর। পুলিশ একজনকে ঘটনাস্থলে গুলি করে হত্যা করে এবং অন্যজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের গাড়িতে বিস্ফোরক ডিভাইস পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন চ্যাবাদ রাব্বি এলি শ্ল্যাঙ্গার, শিশুসহ পরিবারের সদস্যরা।
ট্রাম্পের এই প্রশংসা ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ, নিউ সাউথ ওয়েলস প্রিমিয়ার ক্রিস মিন্স এবং হেজ ফান্ড বিলিয়নেয়ার বিল অ্যাকম্যান আহমেদকে ‘হিরো’ বলে সম্বোধন করেছেন।
এই ঘটনা অস্ট্রেলিয়ায় বাড়তে থাকা অ্যান্টিসেমিটিজম এবং ইসলামোফোবিয়ার মাঝে ঐক্যের বার্তা দিয়েছে। আহমেদের সাহস দেখিয়ে দিয়েছে যে, ধর্ম বা জাতির সীমানা ছাড়িয়ে মানবতা কীভাবে জয়ী হয়।
বিশ্বনেতাদের প্রশংসা, বিশেষ করে ট্রাম্পের বক্তব্য, এই বীরত্বকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে। বন্ডি বিচের বালুকাময় তীরে নিহতদের স্মৃতিতে ফুল জড়ো হয়েছে, কিন্তু আহমেদের গল্প অস্ট্রেলিয়া এবং বিশ্বের ইতিহাসে চিরকাল আলো ছড়াবে।





