ভারতে কি শেষ পর্যন্ত আযান নিষিদ্ধ হতে চলেছে?
ভারতে কি শেষ পর্যন্ত আযান নিষিদ্ধ হতে চলেছে?
ভারতে শব্দ দূষণের অভিযোগে লাউডস্পিকারে আযান দেওয়া নিষিদ্ধ করা হচ্ছে? কিন্তু মন্দিরের ক্ষেত্রে শব্দ দূষণ হচ্ছে না? তখন চারিদিকে পবিত্রতা ছাড়াচ্ছে। আসলে ভারতে হচ্ছে টা কি? তাহলে কি অবশেষে ভারতে আযান দেওয়া নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। ভারতে আর শোনা যাবে না আযানের ধ্বনি।
মহারাষ্ট্রের গোন্ডিয়া জেলার মসজিদ গৌসিয়ার লাউডস্পিকার ব্যবহারের জন্য আবেদন করেন মসজিদ কমিটি। কিন্তু তাদের এই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ। তারা স্পষ্ট জানিয়েছে লাউডস্পিকারে আযান দেওয়া কোনো ধর্মীয় অধিকারের অংশ নয়।
আদালতের মন্তব্য, লাউডস্পিকার ব্যবহার করে আযান দিলে শব্দ দূষণ হয়। আর যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি স্বরুপ এবং কোনো ধর্মই এমন আচারণ কে বাধ্যতামূলক করে না যা অন্যের শান্তিভঙ্গ করে।ভারতে কি শেষ পর্যন্ত আযান নিষিদ্ধ হতে চলেছে?

ভারতের ইসলামিক স্কলারদের দাবি, আদালতের এই মন্তব্য আসলেই শরিয়া সম্মত। লাউডস্পিকারে আযান দেওয়া, যদি মানুষের অসুবিধার কারণ হয় তাহলে লাউডস্পিকার দিয়ে আযান না দেওয়ায় ভালো। অথবা লাউডস্পিকারের সাউন্ড নিম্নসীমার মধ্যে রাখা। যাতে ওই মসজিদে যে এলাকার জনগণ নামাজ পড়ে শুধু তারাই শুনতে পায়।
কারণ নবিজির সময় লাউডস্পিকার ছিলো না। তখন খালি গলায় আযান দেওয়া হত। যা আশেপাশের জনগণ শুনতে পেত। তাই বর্তমানে মসজিদের মাইক গুলোর শব্দ এতটুকু রাখা ভালো যাতে কারো অসুবিধা না হয়।
কিন্তু এসব স্কলারদের দাবি, মসজিদে লাউডস্পিকার দিয়ে আযান দেওয়া নিষিদ্ধ করার পেছনেএ আসলে শব্দ দূষণ একটি বাহানা মাত্র। মুলত ভারত থেকে ইসলাম নির্মুল করার একটি গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ভারতে কি শেষ পর্যন্ত আযান নিষিদ্ধ হতে চলেছে?

কারণ, বাছাই করে তারা মসজিদের লাউডস্পিকার গুলোও বন্ধ করছে। কিন্তু অন্য ধর্মের লাউডস্পিকার গুলো, বিশেষ করে মন্দিরের লাউডস্পিকার গুলো বন্ধ করছে না।
অনেকে বলছে, ইসলামে খারাপ ও অশ্লীল গানবাজনা হারাম এজন্য মসজিদ গুলোও গানবাজনা হয়না। শুধুমাত্র নামাজের জন্য আযান দেওয়া হয়। কিন্তু মন্দিরে উচ্চস্বরে গান বাজনা বাজিয়ে তাদের উৎসব পালন করা হয়। তখন পাশেপাশে মুসলমানদের থাকা রীতিমতো অসম্ভব হয়ে উঠে।
তখন তো মুসলমানেরা বলে না, এটা আমাদের ধর্মে হারাম। তাই এগুলো আমাদের সামনে এত উচ্চস্বরে বাজিও না। কিন্তু শুধুমাত্র আযানের জন্য লাউডস্পিকার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। যদি তাদের ধর্মে হারাম কিছু মুসলমানেরা তাদের সামনে করতো তাহলে তারা আমাদের সাথে কি করতো?
বিচারপতি বিভূতি মেরোত্রা ও ডব্লিউডি স্ট্যান্ডিশের বেঞ্চ সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী রায় উদ্ধৃত করে বলেন, প্রার্থনা বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে লাউডস্পিকারের ব্যবহার ধর্মীয়

স্বাধীনতার অন্তর্ভুক্ত নয়। শব্দ দূষনমুক্ত পরিবেশে বসবাস প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার। তাই এটি নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। ভারতে কি শেষ পর্যন্ত আযান নিষিদ্ধ হতে চলেছে?
ওই ঘটনায়, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রশাসন কয়েক মাস আগে মসজিদের লাউডস্পিকার অপসারণ করেন। তখন মসজিদ কর্তৃপক্ষ আদালতে দাবি করে, আজানের ঐতিহ্য বজায় রাখতে লাউডস্পিকার জরুরি। তবে আদালত ধর্মগ্রন্থের কোথায় লেখা আছে এমন তার প্রমাণ চাই। কিন্তু তারা তা উপস্থাপন করতে পারেনি।
এই রায় প্রকাশের পরে সামাজিক মাধ্যমে প্রশ্ন জোরালো হয়েছে। আইন সমান হলেও তার প্রয়োগ কি সত্যিই সবার ক্ষেত্রে সমান? বহু ব্যবহারকারী মন্তব্য করছেন, মসজিদে লাউডস্পিকার নিয়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিলেও মন্দির বা অন্যান্য ধর্মীয় স্থানে একই কঠোরতা দেখা যায় না।
এক্স-এ বহু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, যদি লাউডস্পিকার ধর্মীয় অধিকার না হয়, তবে মন্দিরের কীর্তন কিংবা গির্জার ঘোষণায়ও একই নিয়ম মানাতে হবে।ভারতে কি শেষ পর্যন্ত আযান নিষিদ্ধ হতে চলেছে?
মহারাষ্ট্রে গত এক বছরে ৩,৩০০-এর বেশি লাউডস্পিকার অপসারণ করেছ৷ প্রশাসন । প্রশাসনের দাবি, শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সব ক্ষেত্রেই একই নিয়ম অনুসরণ করা হচ্ছে। তবে মুসলিম সম্প্রদায়ের অংশ মনে করছে, এই ব্যবস্থার বড় অংশ তাদের ওপরই পড়ছে।







